Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Test link

শীতকালীন ছুটি কীভাবে কাটিয়েছ তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করো।

শীতকালীন ছুটি কীভাবে কাটিয়েছ তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করো। শহর থেকে বেরিয়ে গ্রামের বাড়িতে যেতেই সরু রাস্তা । দু'পাশে ফসলের মাঠ।

শীতকালীন ছুটির অভিজ্ঞতা

শীতকালীন ছুটি কীভাবে কাটিয়েছ তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করো।

শহর থেকে বেরিয়ে গ্রামের বাড়িতে যেতেই সরু রাস্তা । দু'পাশে ফসলের মাঠ । বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে । যেতে যেতে ডানে - বাঁয়ে দেখি , ক্ষেত কাদা - পানিতে মাখামাখি । চারা রোপণের প্রস্তুতি চলছে । কোথাও কোথাও বীজতলা হলুদ - সবুজ , এমনি একটা বীজতলার কচি বুকে চোখ পড়তেই দেখা গেল , সেগুন গাছের কয়েকটা মরা পাতা ওখানে পড়ে রয়েছে।

সেগুন পাতা আকারে বড়ো হলেও ওজনে কম । ছোটবেলায় আমাদের খেলাধুলায় এ পাতার ব্যবহার ছিল । কাঁচা পাতা ভালো করে হাতের তালুতে ডলে নিলে চমৎকার রঙ হয়।

দুপুর ১ টার কিছুটা আগে কালীবাড়ি পৌছালাম । এখান থেকে পাহাড় পাবইজান ' নাকি দশ - পনেরো মিনিটের রাস্তা । তন্বী ( ভ্রমণের আয়োজক ) জানালো , মামির বাড়ির বাকি পথটুকু অটো কিংবা ভ্যান দু'ভাবেই যাওয়া যায় । আমরা একটা ব্যাটারি চালিত ভ্যানে উঠে পা ঝুলিয়ে বসে পড়লাম । শৈলীর এটি দ্বিতীয় ভ্যান জার্নি । এই পথটা মেঠো । চারদিকে সবুজের আরও ঘন বিস্তার । পথজুড়ে ধুলোর প্রাচুর্য আছে , তবে মোটরগাড়ি তেমন চলছে না বলে ধুলো খুব বেশি উড়ছে না । শব্দদূষণের বালাই নেই । শুক্রবার বলেই বোধ হয় লোকজনের আনাগোনা তেমন ছিল না । রাস্তার দু'ধারে ঘর - বাড়ি আর গাছের নিপাট ছায়া । আর গ্রামের মতোই টিন , বাঁশ কিংবা ঝোপ - ঝাড়ের পাঁচিল ।

মামিদের বাড়ি পৌঁছতে বেশিক্ষণ লাগল না । সুন্দর গ্রাম । ছিমছাম । অনেক গাছগাছালি । এদিকটায় পাখি বশে আছে গাছে । ফোনের নেটওয়ার্ক ভালো এখানে । ইলেক্ট্রিসিটি আছে । আমরা হাত - মুখ ধুয়ে নিলাম । ওহ , বলতে ভুলেই যাচ্ছিলাম , মামির নাম সিলভি , আর মামার নাম মিল্কি । ছোট্ট ছেলে সাফিদকে নিয়ে তাদের ছোট্ট সংসার । শহরেই থাকেন । গ্রামে মাঝে মাঝে আসা হয় । এ বাড়িতে নিয়মিত থাকেন মামির বাবা - মা আর একমাত্র ভাইটি । ভীষণ অতিথিপরায়ণ এই মানুষদের উষ্ণ অভ্যর্থনা আর আপ্যায়নে আপ্লুত না হয়ে উপায় নেই । এমন আতিথেয়তা জগতের অন্য যে কোনো আনন্দের অভিজ্ঞতাকে ম্লান করে দিতে পারে ।

প্রথমে পিঠা খেয়ে বাড়ির পেছন দিকটাতে আমরা হাঁটতে গেলাম । পুকুরের ধারঘেঁষা পথ , মাঠের অনেকটা ধু - ধু ; কিছু অংশ সবুজ - শ্যামল । চারদিক রোদ ঝলমল । তবে ডান দিকে হেঁটে গিয়ে উঁচু - নিচু পাহাড়ি রাস্তায় পা দিয়ে দ্বিধান্বিত , সাপটাপ নেই তো ? টিলামতো জমি ; পুরোটাই বৃক্ষরাজিতে পূর্ণ । পাহাড়ি মাটি কেটে চলাচলের রাস্তা তৈরি করা হয়েছে । না , প্রথমত , এটি ভয়ঙ্কর স্থান নয় এবং আরেকটি ব্যাপার হলো , এখানে অন্য ফসলের উপযোগিতা অর্জন সহজ না হলেও এসব গাছপালা থেকে পাওয়া অর্থনৈতিক উপকার সন্তোষজনক জানালেন জমির মালিক ।

দিনের আলো ফুরিয়ে এলো । আমাদের ফিরবার তাড়া ছিল । সবাই থেকে গেল । আমরা বাবা - মেয়ে সন্ধ্যার মুখে ফেরার গাড়িতে উঠলাম । শৈলীর অভিজ্ঞতায় নতুন অনেক কিছু জুটেছে গত পাঁচ - ছয় ঘণ্টায় । কাঠবেড়াল , পেঁচা এবং নানারকম পাখি , নতুন কিছু মানুষের আদর - আপ্যায়ন , সর্বোপরি দাদাবাড়ি ভিন্ন অন্য কোনো গ্রামের পথে বিচরণের বিস্ময় । ওর বিচারে ' পাহাড় পাবইজান ' অন্যরকম সুন্দর এক গ্রাম । ওখানকার মানুষও অন্য রকম ভালো । ঠিক তা - ই , এ এক নতুন অভিজ্ঞতা । নতুন আনন্দ লাভ । ভ্রমণের আয়োজকের জন্য , তার এই প্রাণোচ্ছল মামি এবং তাঁর পরিবারের সবার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।

কৈশোর আহা কৈশোর ! তুমি ছিলে শীতের সকালে নাড়ার আগুনে ওম খেজুরের রসে গেলাসে গেলাসে সুখ ছিলে তুমি ’ ( কবিতা- ফেরারী কৈশোর ; কবি— মাসুম বাদল )

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

© Abc Ideal School. All rights reserved. Developed by Jago Desain