-->

রোগ নিরাময়ে জিরার ৫টি জাদুকরী গুণ

জিরার ঔষধী গুণ

জিরা একটি দরকারি মসলা । প্রতিদিনের রান্নায় জিরা ছাড়া একটুও চলে না । তরিতরকারিতে ভাজা জিরার মন ভোলানো গন্ধ সবার ভালো লাগে । মসলা হিসেবে জিরা দারুণ মজাদার । রান্নায় জিরার চাহিদা খুব বেশি । জিরা আমাদের দেশের মসলা নয় , এদেশে জন্মাতও না । এদেশে অতিথি হয়ে এসেছিল সে । এখন এদেশের বাসিন্দা হয়ে গেছে জিরা । জিরার আদিবাস মিশর দেশে । জিরা ভারতের উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবে বেশি জন্মে থাকে । মসলার চাহিদা অনুসারে বাংলাদেশ ও ভারতে জিরার আছে বিশাল বাজার । জিরার গাছ ছোট ঝোপ জাতীয় । গাছ থেকে বহু ছোট ছোট ডালপালা শাখা - প্রশাখা বের হয় ।

এ গাছ লম্বায় ২/৩ ফুট হয় । পাতাগুলো লম্বা শনের মতো । ফুল হয় সাদা সাদা । সাধারণত শীতে ফুল ফোটে । বৈশাখ - জ্যৈষ্ঠ মাসে ফল ধরে আজকাল বাংলাদেশেও জিরার চাষ হয় । জিরা মসলা হলেও এর আছে নানা ঔষধি গুণ , তাই আমাদের অনেক অসুখ - বিসুখে জিরা কাজে লাগে ।

পেটের অসুখে ( পিত্তদোষ ) জিরার কার্যকরিতা

পেটের অসুখ নানা ধরনের হয়ে থাকে । যখন পেটের অসুখ পিত্তদোষে হয় , তার লক্ষণ হলো ক্ষুধা না লাগা । আমাশয় জড়ানো পাতলা পায়খানা হওয়া । প্রস্রাব কমে যাওয়া ও পানি খেতে ইচ্ছা না করা । এ রকম হলে ৪০০ মিলিগ্রাম মতো ভাজা জিরার গুঁড়া পানিতে গুলিয়ে প্রতিদিন একবার করে খান । এতে উপকার পাবেন । এছাড়াও যদি আমরুল শাকের রস ১ চামচ ভাজা জিরা গুঁড়ার সাথে মিশিয়ে খান , তবে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে । এভাবে ৩/৪ দিন খেতে হবে । যাদের পিত্তদোষ আছে , তাদের গুরুপাক খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে ।

অর্শ রোগে জিরার কার্যকরিতা

যেসব অর্শরোগে পাতলা পায়খানা হয় , কিন্তু ভালো মতো হয় না , মলদ্বারে যন্ত্রণা হয় , তাদের জন্য জিরার পানি উপকারী । এক বা দুই গ্রাম জিরা একটু থেঁতো করে দুই কাপ পানিতে সিদ্ধ করুন । পানি শুকিয়ে আধা কাপ হলে নামিয়ে রাখুন । এবার ঐ পানি ছেঁকে নিয়ে প্রতিদিন একবার করে খান । ২/৩ দিন পরে যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় , তবে মাত্রা কমাতে হবে । এছাড়া ১ কাপ গরম পানিতে ১০/১২ ঘণ্টা ১ বা ২ গ্রাম জিরা ভিজিয়ে রেখে ঐ পানি খেলেও উপকার পাবেন ।

কৃমির সমস্যা

অনেকের কৃমির সমস্যা সারা বছরই থাকে । ছোট কৃমির যন্ত্রণায় যারা অস্থির , তাদের জন্য জিরার পানি উপকারী । ৩/৪ গ্রাম জিরা একটু থেঁতো করে , ২ কাপ পানিতে সিদ্ধ করুন । পানি শুকিয়ে আধা কাপ হলে তা ছেঁকে নিন । প্রতিদিন সকালে ও বিকালে একবার করে খেতে থাকুন । সপ্তাহ খানেক পরে দেখবেন অবস্থার উন্নতি হয়েছে ।

স্বরভঙ্গ সমস্যা সমাধানে জিরার কার্যকরিতা

অনেকের ঠাণ্ডায় , হৃদরোগে , শ্বাস কষ্টের শুরুতে গলা ভেঙে যায় । আবার যাদের বারো মাস আমাশয় থাকে , তাদের গলার আওয়াজটা ভাঙা ভাঙা হয় । এ রকম অবস্থা হলে , ঘোলের সাথে জিরা খেলে অনেকটা উপশম হয় । বাড়িতে পাতা দই ঘোল করে নিন । এর সাথে ৪/৫ গ্রাম জিরার গুঁড়া মিশিয়ে ভাতের সাথে খান । গলা ভাঙা সেরে যাবে । যাদের হাঁপানি আছে , তাদের এই চিকিৎসা চলবে না ।

মেদ কমাতে জিরার কার্যকরিতা

মেদ কমানোর জন্য এক চা চামচ জিরার গুঁড়া সামান্য মধুর সাথে মিশিয়ে দিনে ২ বার খেলে উপকার পাওয়া যায় । এভাবে ১ মাস খেলে মেদ জমতে পারবে না ।

See Also :