
সবলের পরিচয় আত্মপ্রসারে ,
আর দুর্বলের স্বস্তি আত্মগোপনে।
মূলভাব : অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে সফল দৃড়চিত্তের ব্যক্তিরা আত্মবিকাশ ও প্রসারের মাধ্যমে নিজেকে তুলে ধরেন । আর দুর্বল , ভীরু ব্যক্তিরা আত্মগোপনের মাধ্যমে মুক্তির ব্যর্থ প্রসায় চালায় ।
সম্প্রসারিত ভাব : জীবন পুষ্প শয্যা নয় , বরং তা কণ্টকাকীর্ণ । জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি অর্জনের পূর্বশর্ত হলো এ কণ্টকাকীর্ণ দুখময় পথের সমস্ত প্রতিকূলতাকে বরণ করে সামনে অগ্রসর হওয়া । কেবল সবল ব্যক্তির দ্বারাই এই কর্মের মাধ্যমে আত্মবিকাশ সম্ভব ; কোনো দুর্বল দ্বারা নয় । এই পথ চলায় যারা জয়ী হয় তারাই সবল , যোগ্যতম । তাই বলা যায় ‘ Survival of the fittest . ' অর্থাৎ যোগ্যতমরাই বাঁচার অধিকারী । সেজন্য অবশ্যই তাঁদের কঠিন সংগ্রামী ও দৃঢ়চিত্তের অধিকারী হতে হবে । তাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে যে , শিয়ালের মতো একশ বছর বাঁচার চেয়ে সিংহের মতো একদিন বাঁচাও অনেক গুণে ভালো । তবেই তারা দেশ ও জাতির কল্যাণে এই স্বল্পতম সময়ে রেখে যেতে পারে চলার পথের পাথেয় । তারাই পারে জরাগ্রস্তের সমাধির উপরে বিজয়ের নতুন কেতন উড়াতে । কেননা তারা সবল , মধ্যাহ্ন সূর্যের ন্যায় তেজোদীপ্ত , অপ্রতিরোধ্য এবং আত্মপ্রসারে বলীয়ান । অন্যদিকে যারা জড় ও স্থবির , যাদের উদ্যম ও প্রাণচাঞ্চল্য নেই , যারা খাঁচার ভিতরে দরজা বন্ধ করে পড়ে থাকে । জীবনে বন্ধুর পথের সংকট মোকাবিলা করতে তারা ভয় পায় , তারাই দুর্বল । জীবনে বেঁচে থাকার সংগ্রামে তারা সবসময় পেছনের কাতারে থাকে এবং শামুকের ন্যায় আপন খোলসে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখতে চায় । ফলে তারা কেবল নিজেদের ধ্বংসই ডেকে আনে না , বরং দেশ ও জাতির এবং সমাজের অমঙ্গলও ডেকে আনে । তারা নীরবে সব ঝামেলা এড়িয়ে আত্মগোপন করে বেঁচে থাকতে চায় । তারা জানে না নীরবে বেঁচে থাকার নাম জীবন নয় । তাই কথায় আছে , বীরপুরুষেরা মরে একবার আর কাপুরুষ মরে বার বার । তাদের বুঝতে হবে দুর্বলদের কেউ মনে রাখে না , জীবিত থেকেও তারা মৃত । তাই তাদের জীবন অর্থহীন ।
মন্তব্য : সকল দ্বিধা - দ্বন্দ্ব আর আলস্য - সন্দেহ পরিহার করে কাজের মধ্যদিয়ে নিজেকে দক্ষ ও যোগ্য করে নিজের আত্মপ্রসার ঘটাতে হবে । তবেই জীবনে সার্থকতা আসবে । অন্যথায় জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে ।