জীবে প্রেম করে যেই জন ,
সেই জন সেবিছে ঈশ্বর ।
মূলভাব : জীবের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে ঈশ্বরকে যেমন ভালোবাসা হয় না , তেমনি ঈশ্বরের ভালোবাসাও পাওয়া যায় না । কাজেই জীবের প্রতি প্রেমই অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবাদত ।
সম্প্রসারিত ভাব : ঈশ্বর তাঁর সকল সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করেছেন । তাই ঈশ্বরের উপাসনা বা এবাদত করতে হলে বা তাঁকে পেতে হলে তাঁর সৃষ্টিকে ভালোবাসতে হবে । অর্থাৎ তাঁর সৃষ্টিকে সেবা করতে হবে । ঈশ্বর কখনো মানুষের কাছে সেবা বা ভালোবাসা লাভ করার জন্যে আগম করেন না সত্য , কিন্তু তাঁর সৃষ্ট পৃথিবীর অসংখ্য দীন - দরিদ্র মানুষ সম্পদ ও বিত্তশালী মানুষের সাহায্য প্রত্যাশা করে । এসব দরিদ্র মানুষের প্রতি ধনীরা দয়া - দাক্ষিণ্য প্রদর্শন করুক তাই ঈশ্বরের অভিপ্রেত । তাই দরিদ্রের প্রতি সহানুভূতি দেখালে এবং তাদের সেবা ও সাহায্য করলে ঈশ্বরের সন্তুষ্টি বিধান করা হয় । ঈশ্বরকে লাভ করতে সংসার ত্যাগ করে বৈরাগ্য অবলম্বনের প্রয়োজন নেই , বরং সংসারে থেকে সৃষ্টিকে ভালোবাসলেই স্রষ্টাকে লাভ করা যায় । বিভিন্ন সমাজের মানুষ বিভিন্ন উপায়ে ঈশ্বরের উপাসনা করে থাকে । সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি বিধানে এ অবিরাম প্রচেষ্টা মানুষকে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন ধর্মের উপাসনা পদ্ধতি অনুসরণ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে । কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে - ঈশ্বরের প্রকৃত স্বরূপ বুঝতে পারা খুবই কঠিন । তাই জগতে মনীষী ও ধর্মগুরুগণ সবাই এ বিষয়ে একমত যে ঈশ্বরের নৈকট্য লাভের জন্যে বহুদূরে যাবার প্রয়োজন নেই । সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব তাঁর সৃষ্ট জীবগুলোর মধ্যেই রয়েছে বলে আমাদেরকে তাঁর সৃষ্ট জীবের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে । কেননা , অসহায়কে সাহায্য ও সহযোগিতা করলে প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরেরই সেবা করা হয় ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্তের মুখে অন্ন ও পানীয় তুলে দিলে সৃষ্টিকর্তারই সন্তুষ্টি বিধান করা হয় ।
মন্তব্য : জীব জগতের মধ্যে স্রষ্টার মহিমা প্রকাশিত । তাই জীবপ্রেমেই ঈশ্বরপ্রীতির প্রকৃত পথ ।