গুগল নিউজ এ আমাদের অনুসরণ করুন। Google News!

খুদেগল্প: মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার ইচ্ছা স্বপ্ন ও মুনার অনেকদিনের । তারা শ্রীপুর গ্রামে এক মুক্তিযোদ্ধার কাছে গেল মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে ।

গল্পসংকেত: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার ইচ্ছা স্বপ্ন ও মুনার অনেকদিনের । তারা শ্রীপুর গ্রামে এক মুক্তিযোদ্ধার কাছে গেল মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে ।......


মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার ইচ্ছা স্বপ্নিল ও মুনার অনেকদিনের । তারা শ্রীপুর গ্রামে এক মুক্তিযোদ্ধার কাছে গেল মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতে । মুক্তিযোদ্ধার নাম রহমত উল্লাহ । কলেজের অধ্যক্ষ মোমেনুর রহমানের বন্ধু তিনি । মোমেনুর স্যারই তাঁদের এই বীর মুক্তিযোদ্ধার ঠিকানা দিয়েছেন । বাল্যবন্ধু রহমত উল্লাহ ও মোমেনুর স্যার একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে কাঁধে কাঁধ রেখে দেশমাতৃকার মুক্তি ছিনিয়ে আনতে যুদ্ধ করেছেন ।

সেদিন ছিল রবিবার । গ্রীষ্মের রৌদ্রতপ্ত দুপুরে স্বপ্নিল ও মুনা মুক্তিযোদ্ধা রহমত উল্লাহ বাড়িতে পৌঁছায় । পথ খুঁজে পেতে তাদের বেগ পেতে হয় না । শ্রীপুর গ্রামে সবাই এক নামে চেনে মুক্তিযোদ্ধা রহমতের বাড়ি । দরজায় টোকা দিতেই বের হয়ে আসেন সত্তরোর্ধ এক নারী ।

' আসসালামু আলাইকুম । আমরা মুক্তিযোদ্ধা রহমত উল্লাহ স্যারের কাছে এসেছি । শ্রীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোমেনুর স্যার আমাদের পাঠিয়েছেন , ' এক নিঃশ্বাসে বলে ফেলে মুনা ।

প্রৌঢ় নারী তাদের ভিতরে নিয়ে বসান এবং অপেক্ষা করতে বলেন । ভীষণ উৎফুল্ল স্বপ্নিল ও মুনা । জাতির শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে সরাসরি স্বাধীনতার ইতিহাস শোনার সুযোগ আজ বাস্তব হতে যাচ্ছে । দেয়ালের ঘড়ির কাঁটা টিকটিক করে বেজেই চলে । সুনসান নীরবতায় তা যেন স্কুলের ছুটির ঘণ্টা মনে হয় তাদের কাছে । অপেক্ষার প্রহর যেন কাটতেই চায় না । তাদের সামনে যেন সময় থমকে গেছে ।

হঠাৎ কাঠের দরজা ঠেলে বের হয়ে আসেন এক প্রৌঢ় ব্যক্তি । তাদের অপেক্ষার পালা যেন ফুরায় না । আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ । মুক্তিযোদ্ধার মুখে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনার দুর্লভ সুযোগ আজ আর স্বপ্ন নয় । সালাম দিয়ে নিজেদের পরিচয় ও আসার হেতু রহমত উল্লার কাছে তারা খুলে বলে । স্বাধীনতার ইতিহাস শোনার তরুণ প্রজন্মের এই দুই প্রতিনিধির আগ্রহ দেখে মুক্তিযোদ্ধা রহমতও ভীষণ খুশি হন । খুলে দেন তাঁর গল্পের ঝাঁপি । ফিরে যান দুঃসাহসী মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোতে । রোমন্থন করেন সাহসী ও সংগ্রামী মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো ।

১৯৭১ সালে তিনি বি.এস.সি ফাইনাল পরীক্ষা দিচ্ছিলেন । এমন সময় আসে মুক্তিযুদ্ধের ডাক । দেশমাতৃকার মক্তির জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে । ' একাত্তরের এপ্রিল মাসে শ্রীপুরে পাকিস্তানিরা ঢুকে পড়ে । বাড়িঘর , দোকানপাট সব পুড়িয়ে দেয় ওই পশুর দল । প্রতিঘরের পুরুষ সদস্যকে তাঁরা হত্যা করে । নারীদের তুলে নিয়ে যায় । এমন পরিস্থিতিতে আমি যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই'— বলেন রহমত উল্লাহ । পালিয়ে ভারতে যান রহমত উল্লাহ এবং তিন মাস ট্রেনিং শেষে অস্ত্র হাতে ফিরে আসেন দেশকে শত্রুমুক্ত করতে । বলে চলেন রহমত , ' তখন আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ । আমার ট্রেনিং তখন শেষ । আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ঝিনাইদহের মহেশপুরে আকবর চেয়ারম্যানের কাছে । তাঁর অধীনে ছিল মুক্তিবাহিনীর একটি দল আমরা যোগ দিতে দলটি বড় হয় ; সব মিলিয়ে ২০০ জন । ছোট ছোট গ্রুপ করে আমরা অপারেশন করি। নবুয়া , আহম্মদ , ভিকু , রাজ্জাক , সুধীর বিশ্বাসও ছিলেন আমাদের দলে । '

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কুকি সম্মতি
আমরা ট্রাফিক বিশ্লেষণ করতে, আপনার পছন্দগুলি মনে রাখতে এবং আপনার অভিজ্ঞতাকে অপ্টিমাইজ করতে এই সাইটে কুকিজ পরিবেশন করি৷
ওহফ্!
মনে হচ্ছে আপনার ইন্টারনেট সংযোগে কিছু সমস্যা আছে। অনুগ্রহ করে ইন্টারনেটের সাথে সংযোগ করুন এবং আবার ব্রাউজিং শুরু করুন৷
বিজ্ঞাপন ব্লক সনাক্ত করা হয়েছে!
আমরা সনাক্ত করেছি যে আপনি আপনার ব্রাউজারে অ্যাডব্লকিং প্লাগইন ব্যবহার করছেন৷
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যে আয় করি তা এই ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হয়, আমরা আপনাকে আপনার অ্যাডব্লকিং প্লাগইনে আমাদের ওয়েবসাইটকে সাদা তালিকাভুক্ত করার অনুরোধ করছি।